হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ বেরেলবী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।
এক নজরে হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ বেরেলবী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
🌼(সমুদ্র থেকে দু এক বিন্দু)🌼
১) নাম:- আলে রাহমান আবুল বারকাত মুহিউদ্দীন জিলানী।
ডাক নাম:- মুহাম্মাদ মুস্তাফা রাযা খান নুরী বেরেলবী।
তবে বংশের প্রথা অনুযায়ী মুহাম্মদ নামে আক্বিকা করা হয়।
২) উপাধি সমূহ:- তাজদারে আহলে সুন্নাত,শাবিহে গওসে আযাম ও নায়েবে গওসে আযাম ইত্যাদি ইত্যাদি।
৩) পিতা:- আ'লা হাযরাত মুজাদ্দিদে আযাম ইমাম আহমাদ রাযা খান বেরেলবী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
৪) জন্ম:- হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, ২২শে যিলহিজ্জা ১৩১০ হিজরী, ইংরেজি-১৮ই জুলাই ১৮৯২ খৃঃ, রোজ- সোমবার বেরেলী শরীফে জন্ম গ্রহণ করেন।
৫) বাইয়াত ও খেলাফাত:- সুলতানুল আরেফীন হাযরাত সৈয়দ শাহ আবুল হোসাইন আহমাদ নুরী মিঞা মারেহারবী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বেরেলী শরীফ এসে মাত্র ৬ মাস বয়সে হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দকে বাইয়াত করে খেলাফতও প্রদান করেন।
৬) হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সিলসিলায়ে আলিয়া ক্বাদেরীয়া রেজবীয়ার ৪১তম শাইখে তারিকাত ও ইমাম।
৭) হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নিজ জামানার গওস ও কুতুবুল ইরশাদ ছিলেন।
৮) হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ১৩২৮ হিজরী সনে, *শিশু অবস্থায় দুগ্ধ পানে মায়ের সম্পর্ক* সম্বন্ধে প্রথম ফতুয়া লেখেন।
৯) হুযুর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, পিতা আ'লা হাযরাত মুজাদ্দিদে আযাম ইমাম আহমাদ রাযা খান রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর যুগে মোট ১২ বছর যাবৎ ফতুয়া লেখার সুযোগ পেয়েছেন।
১০) হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আজীবন মাথায় আমামা (পাগড়ী) বেঁধে জামায়াত সহকারে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ আদায় করেছেন।
নামাজের সময় হয়ে গেলে ষ্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে ধীরস্থির ভাবে জামায়াত সহকারে তিনি নামাজ আদায় করতেন।
১১) হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সৈয়দ বংশের লোকের এবং ওলামায়ে কেরামের খুব সম্মান করতেন।
১২) হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু দেশ ভাগের পূর্বেই ২ বার হজ করেছেন।
তবে দেশ ভাগের পর ১৯৭১ সালে এক মাত্র তিনি-ই বিনা টিকাতে ও বিনা ছবিতে হজ পালন করার অনুমতি পান।
১৩) হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর লিখা কিতাব সমূহ:- আল্লামা মুফতী আবদুল মুজতাবা রেজবী সাহেব তাঁর তাযকেরায়ে মাশায়েখে ক্বাদেরীয়া রেজবীয়া নামক কিতাবের ৫২০ পৃষ্ঠায় যে লিষ্ট দিয়েছেন, সেই লিষ্ট অনুযায়ী হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ ২৪ খানারও বেশী কিতাব প্রনয়ন করেছেন।
১৪) বিখ্যাত খলিফাগন:- উল্লেখিত কিতাবের ৫২২ পৃষ্ঠায় হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর ৫১জন বিখ্যাত খলিফাগনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
১৫) মুরীদের সংখ্যা:- উল্লেখিত কিতাবের ৫২৩ পৃষ্ঠায় হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর গোটা পৃথিবী জুড়ে সোয়া কোটিরও বেশী মুরীদ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
১৬) হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ইন্তেকালের আগে বলে গেছেন যে, যারা আমার হাতে মুরীদ হওয়ার সুযোগ পেলনা, আমি তাদেরকে বড় পীর সাহেবের হাতে মুরীদ করে নিলাম।
১৭) ইন্তেকাল:- হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ১৩ই মুহাররাম ১৪০১ হিজরী, ইংরেজি-১১ই নভেম্বর ১৯৮১ সাল রোজ- বুধবার রাত ১টা ৪০ মিনিটে ৯২ বছর বয়সে বেরেলী শরীফে ইন্তেকাল করেন।
ইন্না লিল্লাহি অ-ইন্না ইলাইহি রাজেউন।
১৮) হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর ইন্তেকালের দুই দিন পর,আরবী ১৫ ই মুহাররাম, ইংরেজি- ১৩ ই নভেম্বর শুক্রবার ভারতের শীর্ষস্থানীয় আনুমানিক ১৪-১৬ জন ওলামায়ে কেরাম তাঁর জানাযার গোসলে অংশ গ্রহণ করেন।
১৯) নামাযে জানাযা:- হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর জানাযার নামাজে পৃথিবী থেকে আসা আনুমানিক ২৫ লাখ মানুষ অংশ গ্রহণ করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী ওলামায়ে কেরাম বর্ননা করেছেন।
২০) হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর জানাযা নামাজের জামায়াত বেরেলী শরীফের ইসলামীয়া ইন্টার কলেজ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়।
২১) একটি বর্ণনা অনুযায়ী হুযুর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর জানাযার নামাজে কাছোছা শরীফের হুযূর আল্লামা সৈয়দ মুখতার আশরাফ সাহেব আলাইহির রহমা এমামতি করেন।
২২) মাযার শরীফ:- বেরেলী শরীফের খানকাহ শরীফে পিতা আ'লা হাযরাতের মাযার শরীফের বাম পাঁজরে হুযুর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু চীর নিদ্রায় শায়িত আছেন।
আমি আধম ১৯৮৬ সাল থেকে আজ অবধি শতাধিক বার যিয়ারত করার সুযোগ পেয়েছি।
বিঃ দ্রঃ:- হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর মোট ৭টি সন্তান।
তাদের মধ্যে একটি পুত্র সন্তান মুহাম্মদ আনোয়ার রাযা খান বাল্যকালেই তিনি ইন্তেকাল করেন।
বাকি ৬ টি কন্যা সন্তান। এদের মধ্যে সব চাইতে যিনি কনিষ্ঠ কন্যা সন্তান তাঁর-ই সুযোগ্য সন্তান হলেন আমাদের পীর ও মুর্শিদ হুযূর জামালে মিল্লাত মাদ্দা যিল্লাহুল আলী।
দুয়া প্রার্থী
ইতি-২২/০৮/২০২১
✍️খাদিমে আহলে সুন্নাত ওয়া জামায়াত
মুফতী আলীমুদ্দিন রেজবী মাযহারী জঙ্গীপুরী।🌎
Comments -