KeyOfIslam
Welcome To KeyOfIslam.com. KeyOfIslam is the platform to spread love and brotherhood among all people through the light of Prophet Mohammad(peace be upon him), the Final Messanger of Allah. Here you will get informations with precision.
Individual Articles
রমযান মাসের গুরুত্ব ও মর্যাদা
রমযান মাসের গুরুত্ব ও মর্যাদা (ক্বোরআন ও হাদীসের আলোকে) মাওলানা হিশামুদ্দিন মিসবাহী, মুর্শিদাবাদ ইসলামিক মাস গুলির মধ্যে পবিত্র রমযান মাস হলো একটি অন্যতম মাস, কেননা মহান আল্লাহ্ তা’য়ালা রমযান মাসকে বিশেষ মর্যাদা ও সম্মানে সম্মানিত করেছেন। কোরআন ও হাদীসের মধ্যে তার মর্যাদার ক্ষেত্রে অসংখ্য বাণী বর্ণিত হয়েছে । বহু বিশেষত্ব ও বৈশিষ্টের কারণে পবিত্র রমযান মাসের মর্যাদা আরো বৃদ্ধি পায় ॥ রমযান মাস সিয়াম সাধনা ও পরহেয্‌গারী অর্জন করার মাস কোরআন পাকের মধ্যে আল্লাহ্ তা’আলা রোযা রাখাকে অনিবার্য করার পর তার উদ্দেশ্য প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন: یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الصِّیَامُ کَمَا کُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ অনুবাদ : হে  ঈমানদারগণ!  তোমাদের  উপর  রোযা  ফরয   করা   হয়েছে   যেমন   পূর্ববর্তীদের   উপর   ফরয  করা  হয়েছিল,  যাতে তোমাদের পরহেয্‌গারী অর্জিত হয় (সূরা বাক্বারা : আয়াত ১৮৩) রমযান মাস , কুরআন অবতীর্ণ ও রহমতের বার্তাবাহী মাস রমযানের অরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো- এটি কুরআন অবতীর্ণের মাস । রমযানের এক সম্মানিত রাতে (লাইলাতুল কদরে) আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদির জীবন পরিচালনার জন্য গাইড হিসেবে মহাগ্রন্থ কুরআনুল কারীম অবতীর্ণ করেছেন। একাধিক আয়াতে তা এভাবে বর্ণিত হয়েছে: شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ অনুবাদ : রমযানের মাস, যাতে ক্বোরআন অবতীর্ণ হয়েছে, মানুষের  জন্য   হিদায়ত    ও  পথ   নির্দেশ  এবং   মীমাংসার  সুস্পষ্ট  বাণীসমূহ। (সূরা বাক্বারা : আয়াত ১৮৫) রমযান মাস, শয়তান দের আবদ্ধ করে রাখার মাস প্রখ্যাত সাহাবীয়ে রসূল হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِذَا دَخَلَ شَهْرُ رَمَضَانَ فُتِّحَتْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ، وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ، وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِينُ অনুবাদ : রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন যখন রমযান প্রারম্ভ হয় , আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয় আর শৃংখলিত করে দেওয়া হয় শয়তানকে। (মুত্তাফাক আলাই , বুখারী শরীফ , হাদীস নং - 1899) এ বৈশিষ্ট্যের অন্যতম ফলাফল হলো রমযান মাসে মানুষ ধর্ম-কর্ম ও নেক আমলের দিকে বেশি তৎপর হয় এবং অধিকাংশ মাত্রায় মানুষকে মসজিদমুখী হতে দেখা যায়। রমযান মাস , লাইলাতুল কদরের মাস। এ মাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ‘। 'লাইলাতুল কদর’। রাতটি হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। এ রাতে কুরআনুল কারিম অবতীর্ণ হয়েছে। রমযানের শেষ দশকের বেজোড় যে কোনো একটি রাতই ‘লাইলাতুল কদর’। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন: وَالْكِتَابِ الْمُبِينِ - إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنۡذِرِیۡنَ অনুবাদ : সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ ,  নিশ্চয়   আমি   সেটাকে   বরকতময়   রাতে   অবতীর্ণ  করেছি , নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। (সূরা দুখান ; ২,৩) ‌ এমন কি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই মর্মে বিশেষ ভাবে একটি সূরা অবতীর্ণ করে ইরশাদ করেন إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ- وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ - لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ - تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمْرٍ - سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ অনুবাদ : নিশ্চয় আমি সেটা ক্বদরের রাতে অবতীর্ণ করেছি , এবং আপনি কি জানেন ক্বদর রাত্রি কি? ক্বদরের রাত হাজার মাস থেকে উত্তম। এতে   ফিরিশ্‌তাগণ   ও   জিবরাঈল     অবতীর্ণ   হয়ে  থাকেন স্বীয় রবের আদেশে প্রত্যেক কাজের জন্য। এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। (সূরা ক্বদর ,১-৫) রমযান মাস, ক্ষমা পাওয়ার মাস ক্ষমাপ্রাপ্তির মাস রমযান মাস , রমযান মাস পাওয়ার পরও যারা নিজেকে পাপ থেকে মুক্ত করতে পারল না , তাদের ধিক্কার জানিয়েছেন বিশ্বনবি ﷺ , রাসুলুল্লাহ ﷺ (৩ ধরনের ব্যক্তির ব্যাপারে) বলেছেন رَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانُ ثُمَّ انْسَلَخَ قَبْلَ أَنْ يُغْفَرَ لَهُ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ أَدْرَكَ عِنْدَهُ أَبَوَاهُ الْكِبَرَ فَلَمْ يُدْخِلاَهُ الْجَنَّةَ অনুবাদ : ঐ ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, যার কাছে আমার নাম নেওয়া হল অথচ আমার উপর দরুদ পাঠ করল না। ওই ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, যার জীবনে রমযান মাস এল কিন্তু তার ক্ষমাপ্রাপ্ততার পূর্বেই অতিবাহিত হয়ে গেল। ওই ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, যে তার পিতামাতাকে (বা তাদের একজনকে) বৃদ্ধাবস্থায় পেল কিন্তু তাদের খেদমত করার মাধ্যমে সে জান্নাতী হতে পারল না। (তিরমিযী হাদীস নং - 3890) রোযাদারের বিশেষ সম্মানের মাস রমযান মাসের রোযা পালনকারীদের জন্য রয়েছে বিশেষ সম্মান। জান্নাতের একটি দরজা শুধু রমযানের রোযা পালনকারীদের জন্যই নির্ধারিত। এ দরজা দিয়ে অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। হজরত খালেদ ইবনে মাখলাদ রাদিয়াল্লাহু আনহের সূত্রে বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: إِنَّ فِي الْجَنَّةِ بَابًا يُقَالُ لَهُ الرَّيَّانُ يَدْخُلُ مِنْهُ الصَّائِمُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ يُقَالُ أَيْنَ الصَّائِمُونَ فَيَقُومُونَ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ فَإِذَا دَخَلُوا أُغْلِقَ فَلَمْ يَدْخُلْ مِنْهُ أَحَدٌ অনুবাদ : জান্নাতে “রায়্যান” নামক একটি দরজা রয়েছে । এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন রোযা পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাঁদের ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেওয়া হবে, রোযা পালনকারীরা কোথায় ? তখন তারা দাঁড়াবে। তাঁরা ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাঁদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে এ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে। (বুখারী শরীফ , হাদীস নং - 1775) সৎ কাজের প্রতিদান বেড়ে যাওয়ার মাস রমযান মাসে ভালো কাজের প্রতিদান বহুগুণে বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এই মর্মে নবীয়ে করীম ﷺ বলেছেন যে ব্যক্তি রমযান মাসে কোনো একটি নফল ইবাদত করল, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরজ আদায় করল। আর রমযানে যে ব্যক্তি একটি ফরজ আদায় করল, সে যেন অন্য মাসের ৭০টি ফরজ আদায় করল।’ (ইবনে খুযাইমা) এ ছাড়াও রমযান মাসের বহু ফজিলত ও মর্যাদা রয়েছে। যা সংক্ষেপে পর্যলোচনা করা অসম্ভব… আল্লাহ তা’আলা যেন প্রত্যেক মু’মিন মুসলমানকে রমযান মাস যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক প্রদান করেন। রমযানের রহমত ,বরকত , মাগফেরাত ও নাজাত লাভের তাওফিক প্রদান করেন, আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।

Comments -

Most Read Articles