KeyOfIslam
Welcome To KeyOfIslam.com. KeyOfIslam is the platform to spread love and brotherhood among all people through the light of Prophet Mohammad(peace be upon him), the Final Messanger of Allah. Here you will get informations with precision.
Individual Articles
প্রচলিত তাজিয়া বানানো ও তার মিছিল বের করার বিধান
প্রচলিত তাজিয়া বানানো ও তার মিছিল বের করার বিধান প্রশ্ন:- ওলামায়ে কেরাম কি বলেন এ মাসআলা প্রসঙ্গে যে, পবিত্র ইসলাম শরীয়তে প্রচলিত তাজিয়া বানানো ও তার মিছিল বের করা জায়েয আছে কি না ? বিস্তারিত বর্ণনা করুন, প্রতিদান দেয়া হবে। الجواب بعون الملك الوھاب اللھم ھدایة الحق والصواب উত্তর:- প্রচলিত তাজিয়া বানানো ও তার মিছিল বের করা উভয় কর্ম-ই নাজায়েয ও হারাম। এ প্রসঙ্গে ওলামায়ে আহলে সুন্নাত ঐক্যমত পোষণ করেছেন। পূর্বে যে তাজিয়া জায়েয ছিল তা হল হাযরাত ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর রওযা মুবারকের সঠিক নকশা তৈরি করে কোন জায়গায় সম্মানের সাথে রেখে দিয়ে তার দিদার করা। যেমন- কাবা শরীফ ও নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাযার শরীফের ফটো কোথাও আদবের সাথে রেখে দেওয়া। এটা অবশ্যই জায়েয ও বৈধ ছিল। কিন্তু পরক্ষনে বিভিন্ন ডিজাইনের তাজিয়া বানাতে শুরু করা হয়, যার সাথে ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর রওযা মুবারকের কোন সম্পর্কই নাই। অতঃপর সেই তাজিয়া কাঁধে নিয়ে রাস্তা,গলি ও বাজারে ঘোরানো হয়, তাজিয়ার কাছে মান্নত করা হয়, শিরনী দেওয়া হয়, তাকে সাজদা করা হয়, পাশাপাশি তাকে ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর আসল রওযা মনে করা হয়, পর-পুরুষ ও পর-মহিলার ভিড় লাগানো হয়। শোকগাথাঁ ও মাতম করা হয়, বুরাক্ব ও পরীর ফটো বানানো হয়, তাজিয়ার কাছে চাওয়া হয়, ঝুঁকে ঝুঁকে তাকে সালাম করা হয়, ঢোল-বাজনা বাজানো হয়। তারপর তা ছিঁড়ে, ভেঙ্গে মাটিতে দাফন করে লক্ষ-কোটি টাকা বরবাদ করা হয়। এখন এরই নাম হল "তাজিয়াদারী"। যা একাধিক হারাম জিনিসের সমষ্টি। এ জন্য প্রচলিত তাজিয়াকে ওলামায়ে আহলে সুন্নাত ওয়া জামা'আত নাজায়েয ও হারাম বলে ফাতওয়া প্রদান করেছেন। যেমন-সিরাজুস সালিকীন, নুরুল আরেফীন হাযরাত সৈয়দ শাহ আবুল হুসাইন আহমদ নুরী মিঞা রহমতুল্লাহি তা'আলা আলাইহি বলেন: "আমার দাদা এবং মুর্শিদ (হাযরাত সৈয়দ আলে রাসূল রহমতুল্লাহি তা'আলা আলাইহি, (মারেহরা শরীফ) পবিত্র মুহররম মাসে শিয়া ফিরকার বিদ'আত সমূহ, তাজিয়া বানানো এবং শোকগাথাঁ পাঠ করা থেকে নিষেধ করতেন।" (সিরাজুল আওয়ারিফ ফিল ওসায়া ওয়াল মা'আরিফ, পৃষ্ঠা: 177) সিরাজুল হিন্দ‌, হাযরাত আল্লামা শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহেলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন: "মুহাররাম মাসের প্রথম দশকে তাজিয়া বানানো, কবর এবং অন্যন্য আকৃতি ইত্যাদি বানানো জায়েয নয়।" (ফাতাওয়া আযীযিয়া, খন্ড:1, পৃষ্ঠা: 75) আর এক জায়গায় বলেন: "তাজিয়া বানানো যেমন- বিদআতিরা (শিয়ারা) করে আর এরকমই তাবুত, কবরের আকৃতি, ঝান্ডা ইত্যাদি, এসবও বিদ'আত। আর এটা স্পষ্ট যে, এসব খারাপ বিদআত।" (ফাতাওয়া আযীযিয়া, খন্ড:1, পৃষ্ঠা: 75)। আরও এক জায়গায় বলেন: "এ তাজিয়া যা বানানো হয় তা জিয়ারত করার যোগ্য নয়। বরং যোগ্য হল যে, তা অস্তিত্বহীন এবং ধ্বংস করতে হবে। যেমন- হাদীস শরীফে এসেছে যে, مَن رَأى مِنكُم مُنكَرا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ ، فإن لَم يَستَطِعْ فبِلِسانِهِ ، فإن لَم يَستَطِعْ فبِقَلبِهِ و ذلكَ أضعَفُ الإيمانِ . অনুবাদ:- তোমাদের কেউ গর্হিত কাজ হতে দেখলে সে যেন স্বহস্তে (শক্তি প্রয়োগে) পরিবর্তন (নিষেধ) করে দেয়, যদি তার সে ক্ষমতা না থাকে, তবে মুখ (বাক্য) দ্বারা এর পরিবর্তন (নিষেধ) করবে। আর যদি সে সাধ্যও না থাকে, তখন অন্তর দ্বারা (ঘৃণা) করবে, তবে এটা ঈমানের দুর্বলতম স্তর। (মুসলিম শরীফ, হাদীস: 85) (ফাতাওয়া আযীযিয়া, খন্ড:1, পৃষ্ঠা: 76) আ'লা হাযরাত রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন: "প্রচলিত তাজিয়া নাজায়েয ও বিদআত এবং তা বানানো গুনাহ।" (ফাতাওয়া রাযাবীয়াহ, খন্ড: 24, পৃষ্ঠা: 501) আরও বলেন: "প্রচলিত তাজিয়া মন্দ ও খারাপ বিদআত। তা বানানো এবং দেখা কোনটাই জায়েয নয়। আর সম্মান করা ও বিশ্বাস রাখা কঠিন হারাম এবং জঘন্যতম পর্যায়ের বিদআত।" (ফাতাওয়া রাযাবীয়াহ, খন্ড: 24, পৃষ্ঠা: 490) আর এক জায়গায় বলেন: "যেহেতু তাজিয়া বানানো নাজায়েয, এজন্য নাজায়েয কর্মের তামাশা দেখাও নাজায়েয।" (মালফুযাতে আলা হাযরাত, পৃষ্ঠা: 286) তিনি আরও বলেন: "ঝান্ডা (নিশান), তাজিয়া, আসন, মেহেদী, তার মান্নত, ঘোরাফেরা, নৈবেদ্য, ঢোল, বাজনা, শোকগাথাঁ, বিলাপ, মাতম, বানোয়াট কারবালায় যাওয়া, মহিলাদের তাজিয়া দেখার জন্য বের হওয়া এসব কথা হারাম, গুনাহ, নাজায়েয ও নিষেধ।" (ফাতাওয়া রাযাবীয়াহ, খন্ড: 24, পৃষ্ঠা: 499) আ'লা হাযরাত রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুকে প্রশ্ন করা হয় যে, তাজিয়া বানিয়ে বের করা, ঢোল-বাজনা বাজানো, কবরের মতো আকৃতি বানিয়ে জানাযার মতো বের করা, তাতে ফুল ইত্যাদি ছিটিয়ে দেওয়া জায়েয আছে কিনা? এর উত্তরে তিনি বলেন: "এসব কথা নাজায়েয।" (ফাতাওয়া রাযাবীয়াহ, খন্ড:24, পৃষ্ঠা: 508) হুযূর মুফতীয়ে আযামে হিন্দ রহমতুল্লাহি তা'আলা আলাইহি বলেন: "শরীয়ত বিধান মতে প্রচলিত তাজিয়া বানানো নাজায়েয।" (ফাতাওয়া মুস্তাফাবীয়াহ, পৃষ্ঠা: 534) হুযূর সাদরূশ শারীয়াহ মুফতী আমজাদ আলী আযমী রহমতুল্লাহি তা'আলা আলাইহি বলেন: প্রচলিত "তাজিয়া বানানো বিদআত। অনুরূপভাবে ঝান্ডা, দুলদুল (নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খচ্চর যা তিনি তার জামাতা হাযরাত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুকে দান করেছিলেন), কবরের আকৃতি, এবং তা নিয়ে মিছিল করা, ক্রন্দন করা, বুকে আঘাত করা এসব রাফযীদের শিয়াদের প্রথা বা নিয়ম। আমাদের মাযহাবের খেলাফ কাজ।" (ফাতাওয়া আমজাদিয়াহ, খন্ড: 4, পৃষ্ঠা: 185) মালিকুল ওলামা আল্লামা যাফরুদ্দীন বিহারী রহমতুল্লাহি তা'আলা আলাইহি বলেন: "বর্তমানে প্রচলিত তাজিয়া বানানো নাজায়েয ও হারাম।" (ফাতাওয়া মালিকুল ওলামা, পৃষ্ঠা: 366) হুযূর হাফিযে মিল্লাত রহমতুল্লাহি তা'আলা আলাইহি বলেন: "প্রচলিত তাজিয়া বানানো, ঢোল- বাজনা বাজানো ইত্যাদি হল এযীদদের নকল এবং রাফযীদের (শিয়াদের) প্রথা বা নিয়ম। এটা নাজায়েয ও হারাম।" (সংগৃহীত ফাতাওয়া ফাইযুর রাসূল, খন্ড: 2, পৃষ্ঠা: 510) হাকীমুল উম্মত মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন নাঈমী রহমতুল্লাহি তা'আলা আলাইহি প্রচলিত তাজিয়া বানিয়ে তার জুলুস বের করার প্রসঙ্গে বলেন: "উক্ত তারিখে প্রচলিত জুলুস বের করা হল এযীদদের নকল। তারা ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর মস্তক (মোবারক) এবং বাকি আহলে বায়েতের জুলুস বের করেছিল। এসব মুসলমান তাদের নকল করছে। হাদীস শরীফে রয়েছে - مَنْ تَشَبَّہَ بِقَوْمٍ فَھُوَمِنْھُم অর্থাৎ: যে ব্যক্তি কোন গোত্রের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করবে সে তাদের মধ্যে গণ্য হবে। আশুরার দিনে এবাদত, রোযা, সাদকা ও খায়রাত করতে হয়; প্রচলিত নাচানাচি আর লাফালাফি করতে নেই। তাজিয়া বানিয়ে তা দাফন করে দেওয়া হল সম্পদ নষ্ট করা, যেটা হারাম। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন: كُلُوْا وَ اشْرَبُوْا وَ لَا تُسْرِفُوْا ۚ-اِنَّهٗ لَا یُحِبُّ الْمُسْرِفِیْنَ۠ অর্থাৎ:-  আহার করো    ও   পান   করো   আর   সীমাতিক্রম (অপচয়)  করো    না। নিঃসন্দেহে,       সীমাতিক্রমকারীদের ( অপচয় কারীদের) তিনি   পছন্দ করেন না। (সুরা: আরাফ, আয়াত:31) উক্ত ভুল নকশার জুলুস বের করা তা কাঁধের উপরে উঠিয়ে ঘোরানো বাজারের মধ্যে ঘোরানো বেকার কাজ। তাতে ধর্মেরও লাভ নেই, পার্থিব জগতেরও লাভ নেই। এবং এটা হারাম। (ফাতাওয়া নায়ীমিয়াহ, পৃষ্ঠা: 191) আর এক জায়গায় বলেন: "মুহাররামের এই দিন সমূহে নেক কাজের সাওয়াব যেমন অধিক তেমন গুনাহ করার আযাবও অধিক। তাজিয়া বের করা, আনন্দ মিছিল করা, লাফালাফি করা ইত্যাদি কাজ মূলত এযীদ বাহিনী করেছিল। এরা হাযরাত ইমাম হুসাইন ও অন্যান্য শহীদদের মস্তক মোবারক সমূহ বর্শার অগ্রভাগে নিয়ে নেচে গেয়ে আনন্দ প্রকাশ পূর্বক কারবালা থেকে কুফা এবং কুফা থেকে দামেস্কে এযীদের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। আহলে বায়েতের সদস্যরা তাজিয়া মিছিল, মাতম ইত্যাদি কোন দিন করেননি। সুতরাং মুসলমানরা এই মোবারক দিন সমূহে এসব কাজ কখনো করবে না। নতুবা কঠিন গুনাহগার হবে। এসব কাজ থেকে নিজেরাও বিরত থাকবে এবং ছেলেপিলে ও আত্মীয়-স্বজনকেউ বিরত রাখবে। আর রাফযীদের (শিয়াদের) মাহফিলে কখনো যোগদান করবে না। বরং পারলে নিজেরাই মাহফিল আয়োজন করবে এবং শাহাদাতের সঠিক ঘটনা বর্ণনা করবে।"(ইসলামী জিন্দেগী, পৃষ্ঠা: 72-73 ) হুযূর সারকারে কালাঁ হাযরাত সৈয়দ মুখতার আশরাফ আলাইহির রহমা (কেছোছো শরীফ) বলেন: "আহলে সুন্নাত ওয়া জামা'আত -এর দৃষ্টিতে তাজিয়া বলে যে প্রথা সমূহ বুঝানো হয়, সেটা অস্বীকৃত আসলেই অস্বীকৃতির কর্ম। যেমন- মুসলমানের সম্পদ নষ্ট করা, বিলাসের যন্ত্রসমূহ, আমোদপ্রমোদ, মিথ্যা বয়ান, ভুল ধারণা ইত্যাদি। আর এ সমস্ত খারাপ কাজের খারাপ হওয়া ব্যাপারে সুস্পষ্ট দলীল রয়েছে। তৎসহ মসজিদ অথবা মসজিদের বারান্দাকে প্রত্যেক রকমের বিলাস, আমোদপ্রমোদের যন্ত্রসমূহ ও জিনিস সমূহ হতে পাক রাখা জরুরী। (সংগৃহীত খুতবাতে মুহাররাম, পৃষ্ঠা: 473) শারেহে বুখারী আল্লামা মুফতী শারীফুল হক আমজাদী রহমতুল্লাহি তা'আলা আলাইহি বলেন: "তাজিয়া বানানো নাজায়েয ও গুনাহ।" (মাহনামা আশরাফিয়া, April 1999‌ খ্রিষ্টাব্দ) ফাক্বীহে মিল্লাত হাযরাত মুফতী জালালুদ্দিন আহমদ আমজাদী রহমতুল্লাহি তা'আলা আলাইহি বলেন: "ভারতবর্ষে সাধারণত যেরূপভাবে তাজিয়া প্রচলিত রয়েছে তা নিশ্চয়ই হারাম, নাজায়েয এবং মন্দ বিদআত। যেমন- হাযরাত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহেলবী ফাতাওয়া আযীযিয়া'র মধ্যে, আলা হাযরাত ইমাম আহমদ রেযা খাঁন ফাযিলে বেরেলবী রেসালা তাজিয়া দারী'র মধ্যে লিপিবদ্ধ করেছেন এবং মাওলানা হাশমত আলী খাঁন বেরেলভী, মুফতী আব্দুর রশীদ খাঁন নাগপুরী, সাইয়েদুল ওলামা হাযরাত মাওলানা সৈয়দ আলে মুস্তাফা সাহেব মারেহরা শরীফ, হাফিযে মিল্লাত হাযরাত মাওলানা আব্দুল আযীয সাহেব মুবারাকপুরী, বুরহানুল মিল্লাত মুফতী বুরহানুল হক সাহেব জাবালপুরী এবং শাহযাদায়ে আ'লা হাযরাত ইমাম আহমদ রেযা খাঁন বেরেলবী অর্থাৎ- হুযূর মুফতীয়ে আযম হিন্দ কিবলা প্রভৃতি মহান মর্যাদা শালী সংখ্যাগরিষ্ঠ ওলামায়ে আহলে সুন্নাত তাজিয়া বানানো প্রসঙ্গে হারাম, নাজায়েয ও মন্দ বিদআত হওয়াতে ঐকমত পোষণ করেছেন।" (ফাতাওয়া ফাইযুর রাসূল, খন্ড: 2, পৃষ্ঠা: 663) আর এক জায়গায় বলেন: "তাজিয়ার জুলুসের সামনে ও পিছনে ঢোল, তাশা, গান বাজনা, ফিলম- এর গান জানদারের ফটো, মহিলাদের ভিড় এরকম অনান্য বাজে কর্ম যা আজকাল তাজিয়ার মধ্যে করা হয়, নাজায়েয ও হারাম। যে সমস্ত লোক এই বাজে-কর্মের ব্যবস্থাপনা করে এবং যারা তার সমর্থন করে, সকলেই গুনাহগার। মাযহাবে আহলে সুন্নাত ওয়া জামাতের এই বাজে কর্ম সমূহের সাথে কোন সম্পর্ক নেই।" (ফাতাওয়া ফাইযুর রাসূল, খন্ড: 2, পৃষ্ঠা: 512) হাযরাত আল্লামা সৈয়দ শাহ তুরাবুল হক রহমতুল্লাহি তা'আলা আলাইহি বলেন: "প্রচলিত তাজিয়া তৈরি করা জায়েয নেই।" (সংগৃহীত অডিও ক্লিপ) হুযূর শাইখুল ইসলাম হাযরাত আল্লামা সৈয়দ মাদানী মিঞা দামাত বারাকাতুহুমুল আলীয়া (কেছোছা শরীফ) বলেন: "আজ আমাদের হিন্দুস্তানে তাজিয়া বানানোর উদ্দেশ্যে পরিবর্তন হয়ে গেছে। (1) (ইমাম হুসাইন রাদিআল্লাহু আনহু -এর মাযার শরীফের) এ নকশাকে আসল মনে করে। (2) এ নকশাকে বাজে নিয়মে নিয়ে ঘোরাফেরা করে। (3) এ নকশাকে ছিঁড়ে দাফন করে দেয়। এতে মুসলমানদের সম্পদ নষ্ট করা হয়। আর মুসলমানদের সম্পদ নষ্ট করা হারাম। (4) কোনো নিয়মে যদি ওলামায়ে কেরাম তাজিয়ার অনুমতি দেয় তাহলে সেটা হল আপনি তার সঠিক নকশা বানাবেন আর যদি সঠিক নকশা না বানানো হয় তাহলে এটাও জায়েয নেই। কারণ, কোনো ভুল বস্তুকে ইমাম হুসাইন -এর রওযা বলাও ভুল। সুতরাং এ নিয়মে তাজিয়া তৈরি করা বহু কঠিন। কারণ, এখন এসব ওলামায়ে কেরামের হাত থেকে বেরিয়ে জাহিলদের হাতে চলে গেছে। আর এটাকে তারা ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর সাথে ভালোবাসার নাম দিয়ে থাকে। আরে মিঞা! ভালোবাসা তো তাঁর অনুসরণ করাতে রয়েছে; দুচারটে তাজিয়া উঠাতে নয়। লোকেরা ভালোবাসার আসল উদ্দেশ্যই হারিয়ে ফেলেছে। এ মাসআলার হুকুম জেনে রাখুন যে, সঠিক নকশা তৈরি করে কোন জায়গায় রেখে দেওয়া তারপর আবার সারাবছর তা সেখানেই রাখা, তার সম্মান করা একথা আলাদা আর তা উঠানো, তাকে আসল মনে করা, তাকে নিয়ে ঘুরানো এসব জাহিলদের কর্ম।" (https://youtu.be/1C4Bl2tyKQ0) হাযরাত আল্লামা সৈয়দ হাশমী মিঞা দামা যিল্লুহুল আলী বলেন: "তাজিয়া এজন্যেও হারাম যে, তাতে অপচয় এবং নাজায়েয পদ্ধতিতে সম্পদ নষ্ট করা হয়। কারণ, যখন তাজিয়া বের হয় তখন খুবই ধুমধাম করে ঢোল-বাজনা বাজানো হয়। বিভিন্ন রকমে বাজার গরম করা হয়। দুষ্টু এবং অবাধ্য মহিলাদের ভিড় এবং কামভাবে যুক্ত মেলার সম্পুর্ণ প্রথা। তার সাথে সাথে এ খেয়াল করা যে, মনগড়া ও বানোয়াট ফটো হল হুবহু কারবালার শহীদগণের জানাযা অতঃপর লুটমার করে, ছিঁড়ে, ভেঙ্গে দাফন করে দেওয়া হয়। এরকম ভাবে একজন আহলে বায়েতের সম্মানিয় ব্যক্তিত্ব এবং কারবলার শহীদগণের মহাত্ম - এর সাথে মজা এবং তামাশা করা হয়। পক্ষান্তরে প্রতিবছর গরীব মুসলমানদের পকেট থেকে লক্ষ-কোটি টাকা বের করে স্থীয় নির্বুদ্ধিতার ফলে জমিনে দাফন করে দেওয়া হয়। (মাসায়েলে ইসলাম, পৃষ্ঠা: 79) উপরিউক্ত দলীলাদি দ্বারা স্পষ্ট ভাবে প্রতীয়মান হল যে, প্রচলিত তাজিয়া বানানো, তার মিছিল বের করা ঢোল-বাজনা বাজানো অবশ্যই নাজায়েয ও হারাম। এতে ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু কোনো মতেই সন্তুষ্ট হবেন না; বরং উল্টো অসন্তুষ্ট হবেন। কারণ, এসব কর্ম শরীয়ত মতে হারাম। সুতরাং এ সমস্ত কুকর্ম থেকে অবশ্যই বিরত থাকুন এবং অন্যকে বিরত রাখুন। পারলে ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এবং অন্যান্য কারবালার শহীদগণের নামে ফাতিহা করুন। এটা অবশ্যই নেকীর কাজ। হ্যাঁ, যদি হাযরাত ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর রওযা মুবারকের সঠিক নকশা তাবাররুক হিসেবে নিজের বাড়িতে রাখে আর দুঃখ প্রকাশ, বিলাপ, ক্রন্দন, মাতম এবং অন্যান্য কুকর্ম ও নিশ্চিত বিদআত সমূহ থেকে বেঁচে থেকে তার জিয়ারত করে তাহলে এটা জায়েয রয়েছে। কিন্তু এখন এই নকশাতেও আহলে বিদআত তথা শিয়াদের সাথে এক প্রকারের সাদৃশ্য এবং (প্রচলিত) তাজিয়া বানানোর আশংকা থাকে এবং আগামীতে নিজের সন্তানদের বিদআতের দিকে ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর হাদীস শরীফে রয়েছে - اتَّقُوا مَوَاضِعَ التُّهَمِ অর্থাৎ: সন্দেহ যুক্ত জায়গা থেকে বেঁচে থাকো। আর হুযূর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন - . من کان یؤمن باللّٰہ والیوم الاٰخر فلا یقفن مواقف التھم অর্থাৎ: যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন অভিযোগ বা দুর্নামের জায়গা সমূহে না দাঁড়ায়। এজন্য হাযরাত ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর রওযা মুবারককে তাজিয়ার মতো ছবি না বানোনোই উচিত; বরং শুধু মাত্র কাগজের নকশা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে। ‌যেমন- কাবা মোয়াযযামা ও গুমবাদে খাযরা (নবী পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাযার শরীফ) -এর নকশা তাবাররুক হিসেবে রাখা হয়। (ফাতাওয়া ফাইযুর রাসূল, খন্ড: 2, পৃষ্ঠা: 563-564) হুযূর আ'লা হাযরাত রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন: "তাজিয়া যেভাবে প্রচলিত রয়েছে তা অবশ্যই মন্দ বিদ'আত। হ্যাঁ, বাদশাহ তৈমুর যেটা করতেন যে, হাযরাত ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর রওযা মুবারকের সঠিক নকশা মনের শান্তনার জন্য রাখতেন সেটা এমন ছিল যেমন মদীনা মুনাওয়ারা এবং কাবা মোয়াযযামার নকশা। তখন এতটা করতে কোনো কোনো অসুবিধা ছিল না। কিন্তু এখন শিয়াদের সাথে সাদৃশ্যের জন্য তার অনুমতি নেই। এখন ঢোল-বাজনা, শোকগাথাঁ, মাতম, বুরাক্ব পরীর ফটো সমূহ, তাজিয়ার কাছে চাওয়া, তার কাছে মান্নত করা, ঝুঁকে ঝুঁকে তাকে সালাম করা, সাজদা করা প্রভৃতি প্রভৃতি তাতে বহু বিদআত হয়ে গেল। এখন এরই নাম হল তাজিয়া। এসব অবশ্যই হারাম।" (ফাতাওয়া রাযাবীয়াহ, খন্ড: 24, পৃষ্ঠা: 505) والله اعلم بالصواب ইতি (মুফতী) গুলজার আলী মিসবাহী হেমতাবাদ, রায়গঞ্জ, উত্তর দিনাজপুর। শিক্ষক: মাদ্রাসা গওসিয়া ফাসীহিয়া মাদীনাতুল উলূম (সোসাইটি) খালতিপুর, কালিয়াচক, মালদা, পশ্চিম বঙ্গ, ভারত। 13/12/1443 হিজরী 13/07/2022 খ্রিষ্টাব্দ রোজ- বুধবার স্বীকৃতি প্রদান ✅ বহু কিতাবের উদ্ধৃতি সহ তাজিয়া সংক্রান্ত এই ফতুয়াটি আমি পড়ে দেখলাম, কিছু কিছু জায়গায় প্রয়োজনীয় সংশোধনও করলাম, মাশাআল্লাহ উত্তর খুব সঠিক ও সুন্দর পেলাম। রব তায়ালা উত্তর দাতাকে যেন জাযায়ে খায়ের দান করেন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন। ইতি- খাদিমে আহলে সুন্নাত ওয়া জামায়াত (মুফতী) মোঃ আলীমুদ্দিন রেজবী মাযহারী জঙ্গীপুরী। শিক্ষক- নাইত শামসেরিয়া হাই মাদ্রাসা (উচ্চ মাধ্যমিক) গাড়ীঘাট,রঘুনাথগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ। স্বীকৃতি প্রদান ✅ মুফতী গুলজার মিসবাহী -এর লেখা উপরোক্ত ফাতওয়া টি পাঠ করলাম। খুব প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখনী সবাইকে পাঠ করা এবং তার উপর আমল করা উচিত। ইতি (মুফতী) আমজাদ হুসাইন সিমনানী, দ: দিনাজপুর। প্রিন্সিপাল: মাদ্রাসা জামিয়া নুরিয়া, সুকানদিঘী, আমিনপুর, কুশমুন্ডী, দক্ষিণ দিনাজপুর। স্বীকৃতি প্রদান ✅ আলহামদুলিল্লাহ। উপরোক্ত ফতোয়াটি আমি পাঠ করলাম উপস্থিত সময়ের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। যেমন অসুখ সেই মতোই ঔষধ পড়েছে। সংক্ষিপ্ত হলেও দলিল ভিত্তিক আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং একজন আশেকে রাসুল এবং আশিকে আহলে বাইতের জন্য এটাই যথেষ্ট। যারা আহলে বাইতের ভালোবাসার দাবিতে তাজিয়া নির্মাণ করে রাস্তাঘাটে হৈচৈ করে বাস্তবে তারা আহলে বাইতে আতহার থেকে পথচ্যুত হয়ে আছে। আল্লাহ পাক সকলকে বুঝার এবং তার প্রতি আমল করার তৌফিক প্রদান করুন! এবং লেখকের কল্যাণ কামনা করি। আমীন। ইতি (আযীযে মিল্লাত, মুফতী) আব্দুল আজিজ কালিমী ইমাম: 5তলা জামে মসজিদ, কালিয়াচক, মালদা। শিক্ষক: মাদ্রাসা গৌসিয়া ফাসীহিয়া মাদীনাতুল উলূম (সোসাইটি) খালতিপুর, কালিয়াচক, মালদা, পশ্চিম বঙ্গ, ভারত। 14/07/2022

Comments -

FatimaPosted On: 2022-07-21
Very important message for those who are making tajiya in the name of hazrat Husain radiallahu anhu and go here and there with Tajia,, From the article given here it is clear that practice Tajiya is totally prohibited in Islam.
Mansur AlamPosted On: 2022-07-21
Masàallah 🥀🥀🥀🥀🥀🥀🥀
Posted On: 2022-07-22
Mashaallah alhamdulillah khub sundor
Md Noor AlamPosted On: 2022-07-23
আল্লাহ তাআলা সবাই কে অপচয় খরচ থেকে বাঁচার তৌফিক প্রদান করেন
Most Read Articles