হুযূর হাফীযে মিল্লাতের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
হুযূর হাফীযে মিল্লাতের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
মুফতী গুলজার আলী মিসবাহী, উঃ দিনাজপুর
সিনিয়র শিক্ষক ও ইফতা বিভাগের সদস্য: এম. জি. এফ. মাদীনাতুল উলূম, খালতিপুর, কালিয়াচক, মালদা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
নাম: আব্দুল আযীয। উপাধী হল হাফিযে মিল্লাত, উস্তাযুল উলামা ইত্যাদি।
বংশ পরিচয়: আব্দুল আযীয বিন হাফিয নূর বিন মাওলানা আব্দুর রহীম।
হুযূর হাফীযে মিল্লাত রহমতুল্লাহি আলাইহির পিতা হাফিযে ক্বোরআন ছিলেন। তিনি সর্বদা শরীআতের প্রতি আমল করতেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত মোতাবিক স্বীয় জীবন অতিবাহিত করতেন। তাঁর মুখস্থ বিদ্যা এত মজবুত ছিল যে, মানুষ তাঁকে "বড় হাফিয সাহেব" বলে সম্বোধন করতেন।
তাঁর মাতা খুবই নেককার ছিলেন। নিয়মিত নামায আদায় করতেন। রমজানের রোযা রাখতেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের প্রতি আমল করতেন। তাঁর বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্য ছিল তিনি মুসলমানদের মঙ্গল কামনা করতেন। নিজের ঘরে অভাব থাকার পরেও প্রতিবেশীদের খুব বেশি খেয়াল রাখতেন। মাঝে মাঝে নিজের খাবার একজন বিধবা প্রতিবেশীনিকে খাইয়ে দিতেন এবং নিজে ক্ষুদার্থ অবস্থায় থাকতেন। আল্লাহ আকবর!
(হায়াতে হাফিযে মিল্লাত 55)
জন্মগ্রহণ:- হুযূর হাফীযে মিল্লাত রহমতুল্লাহি আলাইহি 1312 হিজরী মোতাবেক 1894 খ্রিস্টাব্দে ভূজপুর নামক গ্ৰামে (ভারত, ইউপি, জেলা-মুরাদাবাদ) রোজ সোমবার সকালে জন্মগ্রহণ করেন।
আলিমে দ্বীন বানানোর ইচ্ছা: তাঁর দাদা হযরত মাওলানা আব্দুর রহিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি দিল্লির প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস শাহ আব্দুল আযীয রাহমাতুল্লাহি আলাইহির নামে তাঁর নাম আব্দুল আযীয রাখেন। এই উদ্দেশ্যে যেন এই সন্তানও আলিমে দ্বীন হয়।
জ্ঞানার্জন: জ্ঞানের সূচনালগ্ন তার আপন পিতা হযরত হাফিয নূর রহমতুল্লাহি আলাইহির হাত দিয়ে শুরু হয়। পিতার কাছেই তিনি নাযেরা এবং ক্বোরআন হিফয করেন। উর্দুর ৪ ক্লাস নিজের শহর ভূজপুরে পড়েন এবং ফার্সির প্রাথমিক কিতাব ভূজপুর এবং পিপল সানা (জেলা মুরাদাবাদ) থেকে পড়ে পারিবারিক সমস্যার কারণে শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করেন।
জামেয়া নাঈমিয়ায় শিক্ষা লাভ:
পারিবারিক সমস্যার কারণে হুযূর হাফিযে মিল্লাত রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হিফয করার পরে এবং কিছু উর্দু কিতাব অধ্যায়ন করার পরে নিজের লেখাপড়া সমাপ্ত করেন। কিন্তু তাকদীরে লিখা ছিল যে, তিনি শুধু হাফিয অবধি সীমাবদ্ধ থাকবেন না বরং বিশ্বের অন্যতম একজন মুহাদ্দিস হিসেবে ভূষিত হবেন। আর তাই হল। দীর্ঘদিন ধরে লেখাপড়া বন্ধ রাখার পর প্রায় ২৭ বছর বয়সে ভারতের প্রসিদ্ধ ইউনিভার্সিটি "জামেয়া নাঈমিয়া" মুরাদাবাদে ভর্তি হন এবং তিন বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে শিক্ষা অর্জন করেন।
হুযূর সাদরুশ শরীয়ার নিকটে:
আরও উচ্চাঙ্গের শিক্ষা অর্জন করার উদ্দেশ্যে ১৩৪২ হিজরীতে হুযূর হাফিযে মিল্লাত এবং তার কয়েকজন সহপাঠী "জামেয়া মঈনিয়া" আজমীর শরীফে উপস্থিত হন। সেখানে ইমামুন নাহু হযরত আল্লামা গোলাম জীলানী মীরাঠী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত সাদরুশ শরীয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহি শিক্ষকতা করতেন। সেখানে হুযূর হাফিযে মিল্লাত হুযূর সাদরুশ শরীয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহির নিকটে তাহযীব, উসুলুশ শাশী এবং মানতিকের কিতাব হামদুল্লাহ ইত্যাদি পড়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন।
আর্থিক সমস্যা: এর পর আবার আর্থিক সমস্যার কারণে তিনি শিক্ষা অর্জন অব্যাহত না রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এবং সরাসরি "দাওরায়ে হাদীস" শরীফ পড়তে ইচ্ছুক হন। এ কথা শুনে হুযূর সাদরুশ শরীয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন: "আকাশ মাটি হতে পারে পাহাড় তার স্থান থেকে সরে যেতে পারে কিন্তু আপনার একটি কিতাবও রয়ে যাবে তা হতে পারে না। অতএব তিনি তাঁর ইচ্ছাকে মুলতাবি করলেন এবং পুরোপুরি একাগ্রতার সহিত হুযূর সাদরুশ শরীয়াহ রহমাতুল্লাহ আলাইহির খেদমতে থেকে ইলমের ধাপগুলো অতিক্রম করতে লাগলেন। অবশেষে সম্মানিত শিক্ষক হুযূর সাদরুশ শারীয়াহ রহমাতুল্লাহি আলাইহির দয়ালু দৃষ্টির কারণে 1351 হিজরী মোতাবেক 1932 খ্রিস্টাব্দে হুযূর আলা হযরত রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব বিখ্যাত ইউনিভার্সিটি "দারুল উলূম মানযারে ইসলাম" বেরেলী শরীফ থেকে "দাওরায়ে হাদীস" তথা মাওলানা কমপ্লিট করেন এবং তাঁর মাথায় ফযীলতের পাগড়ী পরিধান করানো হয়। (হাফিযে মিল্লাত 232)
কর্মজীবন: পড়াশোনা কমপ্লিট করার পর এক বছর ধরে হুযূর সাদরুস শরীয়ার নিকটে বেরেলী শরীফেই থাকেন। এরপর হুযূর সাদরুল আফাযিল আল্লামা সৈয়দ নাঈম উদ্দীন মুরাদাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি আপনাকে আগরা "কানপুর জামে মসজিদে" যাওয়ার কথা বলেন কিন্ত আপনি আদব সহকারে বললেন: হুযূর! আমি চাকরি করব না। হুযূর হাফীযে মিল্লাত রহমতুল্লাহি আলাইহির ইচ্ছা ছিল আমি কোন একটা ব্যবসা করে পয়সা ইনকাম করে তার মাধ্যমে দ্বীনের খিদমত করবো। কিন্ত কিছুদিন পর হুযূর সাদরুস শরীয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহি বেরেলী শরীফ ডেকে বলেন: আমি সর্বদা আমার এলাকা থেকে বাইরে থাকার কারণে আমার জেলার বহু মানুষ পথভ্রষ্ট হচ্ছে। বাতিলপন্থীরা পুরো জেলা দখল করে রেখেছে। এ জন্য দ্বীন ইসলামের প্রচার-প্রসারের উদ্দেশ্য আপনি মুবারকপুর মাদ্রাসা আশরাফিয়ায় যান। সেখানে শিক্ষকতা করবেন এবং এলাকার দিকে নজর রাখবেন।
মুবারকপুরে আগমন
২৯ শাওয়ালুল মুকাররাম ১৩৫২ হিজরী মোতাবেক ১৪ জানুয়ারী ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি শিক্ষকতা আপনার জন্য আজমগড় মোবারকপুর "মাদ্রাসা আশরাফিয়া মিসবাহুল উলূমে" উপস্থিত হন। তাঁর আসার কারণে কয়েক মাসের মধ্যেই পাঠদানের পদ্ধতি এবং ইলম ও আমলের এত চর্চা হতে লাগল যে চারিদিক থেকে জ্ঞান পিপাসুদের স্রোত আসতে লাগল। ছাত্র এত বৃদ্ধি পেল যে, মাদ্রাসায় জায়গা কম পড়ে গেল। ফলে তিনি নিজের প্রচেষ্টায় 1353 হিজরীতে মুবারকপুর গোলা বাজারে একটি বড় দারুল উলুম এর নির্মাণ শুরু করলেন। সুলতানুত তারিকীন হযরত সৈয়দ মাখদুম আশরাফ জাহাঙ্গীর সিমনানী রাদিয়াল্লাহু আনহুর নামনুসারে উক্ত মাদ্রাসা নামকরণ করা হয় "দারুল উলূম আশরাফিয়া মিসবাহুল উলুম"। (সাওয়ানেহে হাফিযে মিল্লাত 39-40)
হুযূর হাফীযে মিল্লাত রহমতুল্লাহি আলাইহি ১৩৬১ হিজরীতে কিছু সমস্যার কারণে পদত্যাগ করে মুবারকপুর থেকে "জামিয়া আরাবিয়া নাগপুর" চলে যান। যেহেতু তিনি একজন অভিজ্ঞ ও পরিশ্রমী শিক্ষক ছিলেন ফলে তাঁর যাওয়ার কারণে "দারুল উলূম আশরাফিয়া মিসবাহুল উলুম" এর শিক্ষা ব্যবস্থা এবং আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়।
এক বছর পর ১৩৬২ হিজরতের হুযূর সাদরুশ শরীয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহির বিশেষ আদেশে নাগপুর থেকে ইস্তিফা দিয়ে আবার মুবারকপুর চলে আসেন এবং আবারও পূর্বের ন্যায় শিক্ষা ব্যবস্থা শুরু করেন। হুযূর হাফিযে মিল্লাতের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে উক্ত মাদ্রাসা আস্তে আস্তে আকাশ ছোঁয়া হতে লাগে। চারদিক থেকে শত শত ছাত্র জ্ঞান অর্জন করার জন্য হাজির হতে শুরু হয়। আবার মাদ্রাসার জায়গা সংকটে পড়ল।
আল- জামিয়াতুল আশরাফিয়া:
আবার হুযূর হাফীযে মিল্লাতের অক্লান্ত পরিশ্রম করে 1392 হিজরীতে মোবারকপুর গোলা বাজার ক্বাসবা থেকে একটু দূরে রোড সংলগ্ন প্রায় 165 বিঘা জমিতে বিশাল আকারে ওলামা ও মাশায়েখ বিশেষ ভাবে শাহযাদায়ে আলা হযরত হুযূর মুফতীয়ে আযম হিন্দ আল্লামা মুস্তাফা রাযা খাঁন রহমাতুল্লাহি আলাইহির হস্ত মোবারক দ্বারা একটি ইউনিভার্সিটি ভিত্তি স্হাপন করেন। যার নামকরণ করা হয় "আল-জামিয়াতুল আশরাফিয়া"। (হায়াতে হাফিযে মিল্লাত 650-700)
এর পর থেকে তিনি নিজের পুরো জীবন আল- জামিয়াতুল আশরাফিয়া মোবারকপুরের নামে ওয়াক্বফ করে দেন।
হুযূর হাফীযে মিল্লাত রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন: "আমি আশরাফিয়াকে ঘাম নয় নিজের রক্ত পান করিয়েছি।"
সুন্নাতের প্রতি আমল:
হুযূর হাফিযে মিল্লাত সারা জীবন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নতের উপরে আমল করতেন। একদা তিনি ডান পায়ে ব্যথা পান। এক ভদ্রলোক ঔষধ নিয়ে আসেন এবং বলেন: জনাব! ঔষধ এনেছি। শীতকাল ছিল বলে হযরত মোজা পরা অবস্থায় ছিলেন। তিনি প্রথমে বাম পায়ের মজা করলেন। ভদ্রলোকটি বললেন: হুযূর! ব্যথা তো ডান পায়ে! তিনি বললেন: বাম পা আগে খোলা সুন্নত। সুবহানাল্লাহ।
শিক্ষকের আদব: হুযূর হাফীযে মিল্লাত রহমতুল্লাহি আলাইহি হুযূর সাদরুশ শরীয়াহ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির দরবারে দু'যানু হয়ে বসতেন। যদি তিনি ক্লাসের সময় প্রয়োজনে ঘর থেকে বাইরে যেতেন তাহলে শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে যেত এবং তাঁর যাওয়ার পর বসে যেত। হুযূর সাদরুশ শরীয়াহ যখন ফিরে আসতেন তখন আদব সহকারে দাঁড়িয়ে যেত কিন্তু হুযূর হাফিযে মিল্লাত রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এই পুরো সময় দাঁড়িয়ে থাকতেন এবং হুযূর সাদরুশ শরীয়াহ রহমাতুল্লাহি আলাইহির পাঠদানের আসনে বসার পরেই বসতেন। (হায়াতে হাফিযে মিল্লাত 70)
খুবই সরল মানুষ ছিলেন:
হুযূর হাফিযে মিল্লাত রাহমাতুল্লাহি অত্যন্ত সহজ এবং সরল মনের মানুষ ছিলেন। সুতি কিন্তু মোটা পোশাক পরিধান করতেন। জামা হতো কলিদার লম্বা। পাজামা গোড়ালের উপরে থাকতো। মাথা মোবারকের উপর টুপি রেখে সর্বদা পাগড়ি পরিধান করতেন। শেরওয়ানিও ব্যবহার করতেন। লাঠি নিয়ে হাঁটতেন। রাস্তাঘাটে চলা সময়ের দৃষ্টিনত করে রাখতেন এবং বলতেন:" আমি মানুষের দুধ ত্রুটি দেখতে চাই না।" বাড়িতে থাকা কালীনও লজ্জাবনত থাকতেন। তাঁর মেয়েরা বড় হলে বাড়ির নির্ধারিত স্থানে থাকতেন। বাড়িতে প্রবেশের সময় লাঠি মাটিতে জোরে নিক্ষেপ করতেন যাতে আওয়াজ হয় এবং পরিবারের লোকেরা সাবধান হয়ে যায়। পর-নারীদের কখনোই সামনে আসতে দিতেন না। (হায়াতে হাফিযে মিল্লাত 175-179)
সবচেয়ে বড় অবদান:
হুযূর হাফিযে মিল্লাত রাহমাতুল্লাহি আলাইহি কয়েক দিক থেকে দ্বীন ও সুন্নীয়তের খেদমত করেছেন। তন্মধ্যে তাঁর সবচেয়ে বড় খেদমত এবং সুন্নীদের প্রতি অবদান হল আল- জামিয়াতুল আশরাফিয়া মুবারকপুর আরবী ইউনিভার্সিটি। এত বড় একটি ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করে তিনি হাফিয, ক্বারী, আলিম, মুফতী, মুহাদ্দিস, মুফাসসির, লেখক, গবেষণ, প্রচারক , শিক্ষক, মুনাযির ইত্যাদি তৈরি করার ফ্যাক্টরি বানিয়ে আহলে সুন্নাত ওয়া জামাআত তথা মাসলাকে আলা হযরতের প্রচারকেন্দ্র তৈরি করে গেছেন।
শিক্ষকমন্ডলী:
হাফিয নূর মুহাম্মদ গোলাম নূর
মাওলানা আব্দুল মাজীদ
হযরত মাওলানা আব্দুল আযীয ফাতাহপুরী
হযরত মাওলানা আজমাল শাহ সম্ভলী
আল্লামা ওসী আহমদ মুহাদ্দিসে সূরতী
হযরত মুফতী মুমতায
হযরত হাফিয সৈয়দ হামিদ হাসান আজমীরী
হুযূর সাদরুস শরীয়াহ মুফতী আমজাদ আলী আযমী (রাহেমাহুমুল্লাহ)
ছাত্রগণ:
সাহজাদা-এ-হাফিযে মিল্লাত আযিয-এ-মিল্লাত হযরত আল্লামা আব্দুল হাফিয মিসবাহী, পৃষ্ঠপোষক: আল- জামিয়াতুল আশরাফিয়া মুবারকপুর, আজমগড়, ইউপি
ক্বায়েদে আহলে সুন্নাত হযরত আল্লামা আরশাদুল ক্বাদরী
বাহরুল উলুম মুফতি আব্দুল মান্নান আজমী
খাতিবুল বারাহিন হযরত আল্লামা শফী নিজামুদ্দিন
মুসলেহ-এ-আহলে সুন্নাত হযরত আল্লামা মুসলেহ উদ্দিন সিদ্দিকী
হযরত আল্লামা মুফতী জাফর আলী নোমানী প্রতিষ্ঠাতা: দারুল উলুম আমজাদিয়া করাচী পাকিস্তান
ফাক্বিহে আজমে হিন্দ হযরত আল্লামা মুফতী শরীফুল হক আমজাদী
শায়খুল ইসলাম আল্লামা সাইয়্যেদ মাদানী মিয়া আশরাফী আল জিলানী, কিছোছা শরীফ
শায়খুল ক্বোরআন হযরত আল্লামা আবদুল্লাহ খান আযিযী মিসবাহী
শায়খে আযমে হিন্দ আল্লামা সৈয়দ ইযহার আশরাফ আশরাফিয়া জিলানী, কিছোছা শরীফ
নায়েবে হাফিযে মিল্লাত হযরত আল্লামা আব্দুর রউফ বালিয়াভী
সাদরুল উলামা হযরত আল্লামা মুহাম্মদ আহমদ মিসবাহী: নাজিমে তালিমা'ত আল-জামিয়াতুল আশরাফিয়া আরবি ইউনিভার্সিটি, উত্তর প্রদেশ।
মুবাল্লিগে ইসলাম হযরত আল্লামা আব্দুল মুবিন নোমানী মিসবাহী, প্রতিষ্ঠাতা: দারুল উলুম কাদেরিয়া চিরিয়াকোর্ট , ইউপি।
মুফাক্কিরে ইসলাম হযরত আল্লামা বাদরুল কাদরী । এ ছাড়া আরও অসংখ্য ছাত্র রয়েছে, যারা ডাইরেক্ট হুযূর হাফীযে মিল্লাতের কাছে জ্ঞান অর্জন করেছেন। বাকি রইল ইনডাইরেক্ট তো এর সংখ্যা কয়েক লক্ষ্য হয়ে যাবে। আজ অখন্ড ভারতে আহলে সুন্নাত ওয়া জামাআতের যত মাদ্রাসা আছে প্রায় সমস্ত মাদ্রাসাতে হুযূর হাফিযে মিল্লাত রাহমাতুল্লাহি তা'আলা আলাইহির ছাত্রগণ অথবা ছাত্রের ছাত্রগণ বা তাদের ছাত্রগণ উঁচু পদে থেকে ক্বোরআন ও হাদীসের শিক্ষা প্রদান করছেন। আলহামদুলিল্লাহ।
রচনাবলী:
তিনি একজন বড়মাপের লেখক ছিলেন। হাজার ব্যস্ততার মাঝেও তিনি একাধিক কিতাব রচনা করেছেন। তার মধ্যে কয়েকটির নাম হল:
(১) ইরশাদুল ক্বোরআন
(২) মা'রিফুল হাদীস
(৩) ফাতাওয়া আযীযিয়া
(৪) মিসবাহুল জাদীদ
(৫) ইমবাউল গাইব
(৬) ফিরক্বায়ে নাজিয়াহ
(৭) হাশিয়ায়ে শরহে মিরক্বাত, ইত্যাদি।
বাইয়াত ও খেলাফত:
তিনি শাইখুল মাশায়িখ হযরত আল্লামা সৈয়দ শাহ আলী হুসাইন আশরাফী (কিছোছা শরীফ) - এর বিশেষ মুরীদ এবং খলীফা ছিলেন। হুযূর সাদরুশ শরীয়াহ রহমতুল্লাহি আলাইহিও তাঁকে খেলাফত ও এজাযত প্রদান করেন। (সাওয়ানেহে হাফিযে মিল্লাত 22)
ইন্তেকাল
ওলীয়ে কামিল, উস্তাযুল উলামা, হুযূর হাফীযে মিল্লাত রহমতুল্লাহি 1লা জামাদিল আখির 1396 হিজরী মোতাবেক 31 মে 1976 খ্রিষ্টাব্দ রাত 11 টা 55 মিনিটে আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন। انا للہ وانا الیہ رجعون
মাযার মোবারক
হুযূর হাফীযে মিল্লাত রহমতুল্লাহি আলাইহির মাযার শরীফ আল- জামিয়াতুল আশরাফিয়া মোবারকপুরের চত্বরে "আযীযী হস্টেল" -এর পশ্চিমে এবং "আযীযুল মাসাজিদ" -এর উত্তর পাশে অবস্থিত। হুযূরের মাযারে জামেয়ার ছাত্ররা সর্বদা ক্বোরআন তেলাওয়াত করেন। শত শত ছাত্র পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পরে জিয়ারত করেন এবং তাঁর মাধ্যমে আল্লাহর রহমত অর্জন করেন।
সমাপ্ত
13/11/2024
Comments -