KeyOfIslam
Welcome To KeyOfIslam.com. KeyOfIslam is the platform to spread love and brotherhood among all people through the light of Prophet Mohammad(peace be upon him), the Final Messanger of Allah. Here you will get informations with precision.
Individual Articles
বর্তমান সময়ে কাদের কাছ থেকে দীনের জ্ঞান অর্জন করা সঠিক ?
বর্তমান সময়ে কাদের কাছ থেকে দীনের জ্ঞান অর্জন করা সঠিক ? মুফতী গোলাম মাসরুর আহমাদ মিসবাহী (পাকুড় ঝাড়খণ্ড) বর্তমান সময়ে বিভিন্ন বাতিল পন্থিদের আবির্ভাব ঘটেছে, যারা নিজেদের মত ও কর্মের প্রচারের জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কেউ টোটো চালাতে চালাতে হাদীস বা দ্বীনের জ্ঞান দিচ্ছে, তো কেউ পাকড়ি বা শাকসবজি বিক্রি করতে করতে হাদীস শিখাচ্ছে, কিছু জেনেরাল শিক্ষিত যে ভালো করে হাদীসের অর্থ টাও জানেনা প্যান্ট শার্ট পরে, মাথাই মশারি লাগিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘেউ ঘেউ করছে, কিছু মুর্খ নামধারী মৌলবি স্টেজে হাদীস ও ক্বুরআনের ভুল অনুবাদ ও ব্যাখ্যা করে, মানুষকে পথভ্রষ্টতার দিকে বরং কুফুরীর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এবং ভোলা ভালা সাধারণ মানুষ তাদের আসল রুপ বুঝতে, আর তাদের ভিতরের দাঁত দেখতে না পাওয়ার কারণে বলছে : ওরাও তো মুসলমান, আল্লাহ কে মানছে, হাদীস ও ক্বুরআন থেকেই বলছে, দীনের দাওয়াত দিচ্ছে, ভালোই কথা বলছে। তাদের কে উদ্দেশ্য করে বলবো : শুধু হাদীস ও ক্বুরআন বলে দিলেই সেটি গ্রহণ করে নিতে হবে এমনটা নয় বরং যাচাই করতে হবে যে হাদীস ও ক্বুরআন কে বর্ননা করেছে ? যদি অনুবাদ হয় তাহলে তার অনুবাদ কে করেছে ? তার ব্যাখ্যা কে করেছে ? এবং কি ভাবে করেছে ? বিনা তদন্তে যে কারোর দেওয়া হাদীসের উপরে আমল করা জায়েয নয়। কেননা হাদীস এখন অনেক ধরনের হাদিস বর্ণনাকারী বের হয়েছে, মিথ্যুক, ধোঁকাবাজ, নবী মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস ও আল্লাহ তা'আলার বাণী ক্বুরআন কে নিজের মতো করে উপস্থাপন করছে। তার অর্থ পরিবর্তন করে মানুষের সামনে পেশ করছে, তার ব্যাখ্যা উল্টো করে দেখাচ্ছে। সুতরাং এই পরিস্থিতিতে যার তার অনুবাদ করা, ব্যাখ্যা করা হাদীস ও ক্বুরআন গ্রহণ করা মোটেই জায়েয নয়। যদি হাদিস বর্ণনাকারী আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত হয়, হাদিসের জ্ঞান রাখে, তাঁর অনুবাদ করার দক্ষতা থাকে, সে পরহেজগার মুত্তাকী হয় এবং সে কোন বাতিল পন্থির মান্যকারী না হয়, তাহলে তার কাছ থেকে দীনের জ্ঞান ও হাদিসের কথা শ্রবণ করা ও শিক্ষা নেওয়া জায়েয আছে। অন্যথায় বর্তমান যুগের পথভ্রষ্টকারী, মিথ্যুক ধোকাবাজ নামধারী আহলে হাদীসদের বলা হাদিস ও তাদের শিখানো দীন, শ্রবণ করে তার প্রতি আমল করা জায়েজ নয়। বরং যদি তারা কোন পোস্ট করে থাকে সেটি কোন হাদীস হোক বা তার অনুবাদ বা ব্যাখ্যা কিংবা অন্য কিছু এক কথায় দ্বীনের কোন জিনিস দিয়ে থাকে, তা থেকে দূরে থাকতে হবে, সেটির প্রতি আমল করা যাবে না। এই প্রসঙ্গে কিছু হাদীসে পাক ও মুহাদ্দিস গনেদের মতামত: (1) عن أبي هُرَيْرَةَ قال : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " يَكُونُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ، يَأْتُونَكُمْ مِنَ الْأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوا أَنْتُمْ وَلَا آبَاؤُكُمْ، فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ، لَا يُضِلُّونَكُمْ وَلَا يَفْتِنُونَكُمْ ". (মুসলিম শরীফ প্রথম খন্ড পৃষ্ঠা নং ১১) অনুবাদ : হাজরতে আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: শেষ যামানায় কিছু ধোঁকাবাজ, মিথ্যুকদের আবির্ভাব ঘটবে যারা তোমাদের নিকট এমন এমন হাদীস নিয়ে আসবে যা তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষরা কখনোই শুনোনি। তাদের থেকে দূরে থাকিও। যাতে তোমাদের কে তারা পথভ্রষ্ট না করে দেয় এবং তোমাদের কে ফিতনার মধ্যে ফেলে না দেয়। (2) عَنِ ابْنِ سِيرِينَ قَالَ : لَمْ يَكُونُوا يَسْأَلُونَ عَنِ الْإِسْنَادِ، فَلَمَّا وَقَعَتِ الْفِتْنَةُ قَالُوا : سَمُّوا لَنَا رِجَالَكُمْ، فَيُنْظَرُ إِلَى أَهْلِ السُّنَّةِ فَيُؤْخَذُ حَدِيثُهُمْ، وَيُنْظَرُ إِلَى أَهْلِ الْبِدَعِ فَلَا يُؤْخَذُ حَدِيثُهُمْ. (মুসলিম শরীফ প্রথম খন্ড পৃষ্ঠা নং ১১) অনুবাদ : বিখ্যাত তাবিঈ মুহাম্মদ ইবনে সিরীন থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : প্রথমে, সনদের (বর্ণনা কারি) ব্যাপারে মুহাদ্দিসানে কেরামগণ জিজ্ঞাসা করতেন না, কিন্তু যখন ফিতনার আবির্ভাব ঘটল তখন তিনারা বলতে লাগলেন তোমরা নিজের নিজের সনদ বল, তাদের নাম বল। সুতরাং যদি সেই বর্ণনাকারিরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত হতো তাহলে তাদের হাদিস নেওয়া হতো, কিন্তু যদি বর্ণনাকারীরা পথভ্রষ্ট হতো তাহলে তাদের হাদিস নেওয়া হতো না। (3) عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ قَالَ : إِنَّ هَذَا الْعِلْمَ دِينٌ، فَانْظُرُوا عَمَّنْ تَأْخُذُونَ دِينَكُمْ. (মুসলিম শরীফ প্রথম খন্ড পৃষ্ঠা নং ১১) অনুবাদ : সেই মুহাম্মদ ইবনে সিরীন থেকেই বর্নিত, তিনি বলেন : হাদিস বা সনদের জ্ঞান দ্বীনের একটি অংশ সুতরাং তোমরা দেখে নাও কার কাছ থেকে নিজের দ্বীন বা হাদীস নিচ্ছ। (4) قَالَ سَعْدَ بْنَ إِبْرَاهِيمَ : لَا يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَّا الثِّقَاتُ. (মুসলিম শরীফ প্রথম খন্ড পৃষ্ঠা নং ১১) অনুবাদ : সাদ ইবনে ইব্রাহিম বলেন: সিক্বা বর্ণনা কারী ব্যতীত কারোর কাছ থেকে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদিস নেওয়া যাবে না। সিক্বা : আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের ওই ব্যক্তি কে বলা হয় যে পরহেজগার মুত্তাকী, যার স্মৃতিশক্তির মধ্যে কোন দুর্বলতা নেই এবং যার হাদিসের ব্যাপারে দক্ষতা আছে। (5) عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ : جَاءَ بُشَيْرٌ الْعَدَوِيُّ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ، فَجَعَلَ يُحَدِّثُ وَيَقُولُ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَجَعَلَ ابْنُ عَبَّاسٍ لَا يَأْذَنُ لِحَدِيثِهِ وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِ، فَقَالَ : يَا ابْنَ عَبَّاسٍ، مَا لِي لَا أَرَاكَ تَسْمَعُ لِحَدِيثِي ؟ أُحَدِّثُكَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا تَسْمَعُ. فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : إِنَّا كُنَّا مَرَّةً إِذَا سَمِعْنَا رَجُلًا يَقُولُ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ابْتَدَرَتْهُ أَبْصَارُنَا، وَأَصْغَيْنَا إِلَيْهِ بِآذَانِنَا، فَلَمَّا رَكِبَ النَّاسُ الصَّعْبَ وَالذَّلُولَ لَمْ نَأْخُذْ مِنَ النَّاسِ إِلَّا مَا نَعْرِفُ. (মুসলিম শরীফ প্রথম খন্ড পৃষ্ঠা নং ১০) অনুবাদ : মুজাহিদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: বুশাইর আল-আদবি, হাজরাতে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু'র কাছে এসে হাদীস শুনাতে লাগলো এবং বলতে লাগলো "আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন" কিন্তু আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস তার কথায় কান দিচ্ছিলেন না এবং তার দিকে তাকাচ্ছিলেন না। তখন সে বলতে লাগল :হে ইবনে আব্বাস! আপনার কি হয়েছে ? আপনি আমার হাদিস শুনছেন না। আমি আপনাকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীস শুনাচ্ছি, কিন্তু আপনি শুনছেন না। তখন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বললেন: আমরা আগে যখন কোন ব্যক্তি কে এই বলতে শুনতাম যে " রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন " তখন আমরা দৌড়ে যেতাম এবং কান লাগিয়ে শ্রবণ করতাম, কিন্তু যখন থেকে মানুষ সহি ও দুর্বল সব রকমই হাদিস বর্ণনা করতে লেগলো তখন থেকে আমরা তাদেরই হাদিস গ্রহণ করি যারা আমাদের পরিচিত। (6) قال عَبْدَ اللَّهِ بْن المبارك : الْإِسْنَادُ مِنَ الدِّينِ، وَلَوْلَا الْإِسْنَادُ لَقَالَ مَنْ شَاءَ مَا شَاءَ. (মুসলিম শরীফ প্রথম খন্ড পৃষ্ঠা নং ১২) অনুবাদ : আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারাক বলেন: সনদ হচ্ছে দিনের একটি অংশ। যদি সনদ না হত তাহলে যে কেউ যা ইচ্ছা বলত। অর্থাৎ বর্ননা কারিই আসোল, যদি বর্ণনা কারি সঠিক হয় তাহলে হাদিস সঠিক এবং যদি বর্ণনাকারীর মধ্যে ভেজাল থাকে তাহলে হাদিসের মধ্যেও ভেজাল থাকবে। অর্থাৎ হাদিস নিতে হলে বর্ণনা কারি দেখে নিতে হবে। এই সমস্ত হাদীস ও মুহাদ্দিস গনেদের নস ও বার্তা দ্বারা প্রমাণ হচ্ছে যে, যে কারোর কাছ থেকে হাদীস বা দ্বীনের জ্ঞান নেওয়া বা বক্তব্য শ্রবণ করা যাবে না বরং ধোঁকাবাজ মিথ্যুক পথভ্রষ্টদের থেকে দূরে থাকতে হবে। কারোর কাছথেকে হাদীস বা দ্বীনের জ্ঞান নেওয়া বা বক্তব্য শ্রবণ করার পুর্বে দেখে নিতে হবে যে সে কেমন ? যদি সে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত, পরহেজগার, মুত্তাকী, সহি হাদীস বর্ণনাকারি এবং দ্বীনের দক্ষতা রাখে তাহলে তার কাছথেকে হাদীস বা দ্বীনের জ্ঞান নেওয়া বা তার বক্তব্য শ্রবণ করা যেতে পারে অন্যথায় তাদের থেকে নিজের ঈমান ও আমল, দুনিয়া ও আখেরাত বাঁচাতে হবে। এইগুলো ৭০০-৮০০ বা এক হাজার বছর বরং তারো পুর্বের কথা, যখন মুহাদ্দিসানে কেরামেরা হাদিসের তদন্ত করতেন, সহি ও দুর্বল হাদিসের বাছাই করতেন। তাহলে এখনকার অবস্থা কি হবে। এখন কি যার তার কাছ থেকে হাদিস নেওয়া, দীনের জ্ঞান অর্জন করা ঠিক হবে ? হাফিজুল হাদীস আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী নিজের পুস্তক "নুযহাতুন নাযার" এর মধ্যে বলেন: ثم البدعة هي إما ان تكون بمكفر كان يعتقد ما يستلزم الكفر أو بمفسق فالاول لا يقبل صاحبها الجمهور.... المعتمد الذي ترد له روايته من انكر امرا متواتر من الشرع معلوما من الدين بالضروره وكذا من اعتقد عكسه والثاني يقبل من لم يكن داعية الى بدعته إلا أن روى ما يقوي بدعته فيرد على المذهب المختار. ( নুযহাতুন নাযার পৃষ্ঠা নং ৭১,৭২,৭৩) অনুবাদ: তারপর পথভ্রষ্টতা: হয়তো তার পথভ্রষ্টতা কুফর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে কিংবা কুফুর পর্যন্ত পৌঁছায়নি কিন্তু তার পথভ্রষ্টতা গুনাহে কবিরা ফিসক পর্যন্ত পৌঁচেছে, প্রথম পর্যায়ের বর্ণনাকারীর হাদিস; জমহুর ( বেশিরভাগ) ওলামায়ে কেরামগণের নিকটে কবুল করা যাবে না। এর পর বিভিন্ন মতভেদ বয়ান করার পর বলেন: কিন্তু সঠিক এটাই যে ওই ব্যক্তির বর্ণনা করা হাদিস রদ করে দেওয়া হবে, গ্রহণ করা যাবে না , যে শরীয়তের হুকুম যেটি জরুরীয়াতে দিনের মধ্যে পড়ে তার অস্বীকার করে কিংবা তার বিপরীত আকিদা রাখে। এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের বর্ণনাকারীদের বর্ণনা তখনই গ্ৰহণ করা যাবে যদি তারা নিজেদের মাযহাবের প্রচার ও প্রসারকারী না হয়, কিন্তু যদি তারা নিজেদের ভ্রষ্ট মাযহাবের প্রচার ও প্রসার করে, তাহলে তাদের বর্ণিত হাদিস রদ করে দেওয়া হবে এটিই সঠিক। সারাংশ : যাদের আকিদা কুফর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে তাদের কোন বর্ণনা করা হাদিস গ্রহণ করা যাবে না সেটিকে মানা চলবে না। এবং যাদের আকিদা কুফর পর্যন্ত তো পৌঁছায়নি কিন্তু পথভ্রষ্টতা পর্যন্ত পৌঁচেছে এবং তারা নিজের বাতিল মাযহাবের প্রচার ও প্রসার করে তাহলে তাদের বর্ণনা করা হাদিস গ্রহণযোগ্য হবে না। এবং আল্লামা ইমাম নবাবী নিজের পুস্তক "তাক্বরিবুন নবাবী" এর মধ্যে বলেন: من كفر ببدعته لم يحتج به بالاتفاق. ومن لم يكفر ... وقيل يحتج به إن لم يكن داعية إلى بدعته ولا يحتج به إن كان داعية و هذا هو الأظهر الاععدل. ( তাক্বরিবুন নাবাবী, তাদরিবুর রাবীর সঙ্গে, পৃষ্ঠা নং ৪৯২ ) অনুবাদ: যার পথভ্রষ্টতা কুফুর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে সমস্ত ওলামায়ে কেরামগণের সম্মতি অনুযায়ী তার হাদীস গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু যদি তার পথভ্রষ্টতা কুফুর পর্যন্ত না পৌঁছায় - অনেক মতভেদ বয়ান করার পর বলেন - এবং বলা হয়েছে: যদি সে নিজের ভ্রষ্ট মাযহাবের প্রচার ও প্রসার না করে তাহলে গ্ৰহণযোগ্য হবে কিন্তু যদি নিজের ভ্রষ্ট মাযহাবের প্রচার ও প্রসার করে থাকে তাহলে তার হাদীস গ্রহণযোগ্য হবেনা। এবং এই মতটিই সব থেকে সঠিক ও ন্যায়সঙ্গত। সুতরাং বুঝা গেল যাদের আক্বীদা কুফুরী পর্যন্ত পৌঁছে গেছে তাদের কাছ থেকে হাদিস বা দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করা চলবেনা, না জায়েয। এবং যাদের আক্বিদা কুফুরী পর্যন্ত পৌঁছায়নি কিন্তু তারা পথভ্রষ্ট এবং নিজেদের ভ্রষ্ট আক্বীদার প্রচার ও প্রসারে লিপ্ত তবুও তাদের ওয়ায ও নসিহত শ্রবণ করা বা তাদের নিকট থেকে হাদীস ও দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করা যাবেনা। দেওবন্দী এবং নামধারী আহলে হাদীস ইত্যাদি বাতিল পন্থিদের আক্বীদা কুফুরী পর্যন্ত পৌঁছে গেছে সুতরাং তাদের মজলিসে বসা, বক্তব্য শ্রবণ করা, তাদের পোস্ট করা হাদিসের উপর আমল করা, তাদের হাদীস বা ক্বুরানের অনুবাদ বা ব্যাখ্যা পড়া বা সঠিক মনে করা এক কথায় তাদের কাছ থেকে কোন ধরনের দীনের জ্ঞান অর্জন করা জায়েজ নয়। দেওবন্দী এবং নামধারী আহলে হাদীস পন্থিদের কিছু জঘন্য কুফুরী আক্বীদা যা শুনে একজন প্রকৃত মুসলমানের লোম দাঁড়িয়ে যাবে :- (১) আল্লাহ মিথ্যা কথা বলতে পারে। লেখক: রশিদ আহমদ গাংগুহী, বইয়ের নাম: ফাতাওয়া রাশিদিয়া। (২) শয়তান এবং মালাকুল মউত এর জ্ঞান নবী'র জ্ঞানের থেকেও বেশি। লেখক: খলীল আহমদ আমবেঠি। বইয়ের নাম: বারাহীনে ক্বাতিয়া। (৩) আল্লাহ তা'আলা নবী কে যেমন ও যতটুকু অদৃশ্যের জ্ঞান প্রদান করেছেন সেইরকম ও ততটুকু জ্ঞান তো সাধারণ মানুষ, পাগল, ছোট বাচ্চা এমনকি পশু পাখিদের কেও দিয়েছেন। লেখক: আশরাফ আলী থানবী। বইয়ের নাম: হিফজুল ঈমান। (৪) নামাজের মধ্যে নবী'র স্মরণ আসা, গরু বা গাধার স্মরণ আসার থেকেও খারাপ। লেখক: ইসমাইল দেহলেবী। বইয়ের নাম: সিরাতে মুস্তাক্বিম। (৫) নবীজি আমাদের বড়ো ভাই যথেষ্ট, তিনার সম্মান বড়ো ভাইয়ের মতো করতে হবে। লেখক - ইসমাইল দেহলেবী, বইয়ের নাম: তাকবিয়াতুল ঈমান। (৬) নবী মরে মাটিতে মিশে গেছে। লেখক - ইসমাইল দেহলেবী, বইয়ের নাম: তাকবিয়াতুল ঈমান। (৭) নবী কে তাগুত অর্থাৎ শয়তান বলা জায়েজ। লেখক: হুসাইন আলী দেওবন্দী, বইয়ের নাম: তাফসিরে বালাগাতিল হিরান। (৮) নবী এবং দাজ্জালের একই বৈশিষ্ট্য। লেখক- ক্বাসিম নানোতবী, বইয়ের নাম: আবে হায়াত। (৯) নবীর পরে কোন নবী এলে তিনার শেষ নবী হওয়াতে কোন পার্থক্য আসবেনা, অর্থাৎ নবীর পরে আরো নবী আসতে পারে। লেখক - ক্বাসিম নানোতবী, বইয়ের নাম: তাহজিরুন নাস। -আল্লাহ এইরকম জঘন্য ঘৃণিত কুফুরি আক্বিদা থেকে প্রত্যেক মুসলমান কে বাঁচায় আমীন - একটু ইনসাফ করে বলেন যে পন্থির মান্যকারীরা এইরকম জঘন্য ঘৃণিত আক্বীদা রাখে তারা মুসলমান হতে পারে ? এবং উপরোক্ত দলিলাদির ভিত্তিতে তাদের বক্তব্য, হাদীস বা দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করা তাদের অনুবাদ বা ব্যাখ্যা করা হাদিস গ্রহণ করা জায়েজ হবে ? কোন মতেই না। এছাড়াও তারা নিজেদের ভুল ও বাতিল মাযহাব, কর্ম ও বিশ্বাস কে প্রমাণ করার জন্য হাদীস পাকের ভুল অনুবাদ ও ব্যাখ্যা এমনকি নিজের মন মতো শব্দ যুক্ত করে সোশ্যাল মিডিয়া তে পোস্ট করছে। যার জলন্ত উদাহরণ: কিছু দিন পূর্বে একটি পোস্ট দেখলাম। যেখানে বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত শরীফের রেফারেন্স দিয়ে একটি হাদিসের শুধু বাংলা অনুবাদ লিখেছে, হাদীসের আরবি শব্দ নেই । সেখানে এমন এমন কথা লিখেছে যেটি ক্বিয়ামত পর্যন্ত তারা ঐ হাদীসে দেখাতে পারবেনা। আপনাদের কে ওদের আসল পোস্ট টা আগে দেখাচ্ছি। তারা লিখেছে : ((( নবী বলেছেন জন্মদিন পালন করলে আমার সুপারিশ পাবেনা । রসূল (সঃ) বলেন যে ব্যক্তি জন্মদিন, মৃত্যুদিন, বিবাহ বার্ষিকী, কুলখানি বা কোন দিবস পালন করেছে সে ততবারই বিদয়াত করছে, আমার সুপারিশ তার জন্য প্রযোজ্য নয়। ( বুখারি ২৬৯৭ / মুসলিম ১৭১৮/ মেশকাত ১৪০) ))) সর্ব প্রথম আমি দুনিয়ার সমস্ত আহলে খবিশদের কে চ্যালেঞ্জ করছি, যদি কোন মায়ের বৈধ সন্তান , বুখারি, হাদিস নং: ২৬৯৭/ মুসলিম, হাদীস নং ১৭১৮/ মিশকাত হাদীস নং ১৪০, তাদের রেফারেন্স দেওয়া হাদীসে " জন্মদিন, মৃত্যুদিন, বিবাহ বার্ষিকী, কুলখানি বা কোন দিবস পালন করেছে সে ততবারই বিদয়াত করছে, আমার সুপারিশ তার জন্য প্রযোজ্য নয় " এই শব্দ দেখাতে পারে, তাহলে তাকে মুখের চাওয়া পুরুস্কার দিবো। ক্বিয়ামত চলে আসবে এই শব্দ উক্ত হাদিসে কোন মায়ের লাল দেখাতে পারবেনা। একতো হাদীসের আরবি শব্দ দেয়নি দ্বিতীয় পুরো হাদিস টা বানানো, হাদীসের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্কই নেই। আসুন আপনাদের কে দেখাই সেই হাদীসে কি লিখা আছে ? عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ ". অনুবাদ: আম্মা আয়েশা সিদ্দিকা রদিয়াল্লহু তা'আলা আনহা বলেন: আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি আমার এই দীনের মধ্যে নতুন জিনিস চালু করলো যেটি সেই দীনের মধ্যে নেই সিটি প্রত্যাখ্যাত। আচ্ছা বলেন তো এই হাদীসের মধ্যে ( জন্মদিন, মৃত্যুদিন, বিবাহ বার্ষিকী, কুলখানি বা কোন দিবস পালন করেছে সে ততবারই বিদয়াত করছে, আমার সুপারিশ তার জন্য প্রযোজ্য নয়) এই শব্দগুলোর নাম গন্ধ আছে ? তাহলে একটু ইনসাফ করে বলেন এইরকম মিথ্যুক, ধোঁকাবাজ, পথভ্রষ্ট, হাদীস চোরেদের পোস্ট করা হাদীস বা তার অনুবাদ, কিংবা কোন হাদীসের ব্যাখ্যার প্রতি ভরসা করা যাবে ? তাদের মজলিসে বসা, বক্তব্য শ্রবণ করা যাবে ? তাদের কাছ থেকে কোন ধরনের দীনের জ্ঞান অর্জন করা যাবে ? কোন মতেই যাবেনা। আমি সমস্ত মুসলমান আল্লাহর বান্দা রসূল প্রেমিক দেরকে অনুরোধ করবো সকলেই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী হয়ে থাকেন, হাদীস ও ক্বুরআন ওয়ায ও নসিহত বক্তব্য ইত্যাদি দীনের জ্ঞান কোন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত ভালো আলিমে দ্বীনের কাছ থেকে শিক্ষা অর্জন করেন, সঠিক পথে থাকবেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতই একমাত্র নাজাত প্রাপ্ত দল। বাকি সমস্ত দল বাতিল গুমরাহ পথভ্রষ্ট। এবং আল্লাহ তাআলা বেশি ভালো জানেন।

Comments -

Most Read Articles